বানান ও অভিধান (৪র্থ পরিচ্ছেদ)

নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - বাংলা - Bangla - ব্যাকরণ মেনে লিখতে শিখি | NCTB BOOK
1.3k
Please, contribute by adding content to বানান ও অভিধান.
Content

বর্ণানুক্রমে শব্দ সাজাই (৪.৪.১)

582

বাংলা অভিধানে যে ক্রমে বর্ণমালা সাজানো থাকে তা নিচে দেখো।

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

এই ক্রমের সঙ্গে শিশুপাঠ্য বইয়ের বর্ণানুক্রমের তফাত কোথায়?

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

নিচের বাম কলামের শব্দগুলোকে অভিধানের বর্ণক্রম অনুযায়ী সাজিয়ে ডান কলামে লেখো। লেখা শেষ হলে সহপাঠীর সঙ্গে মিলিয়ে দেখো এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো।

এলোমেলো নন্দ

বর্ণক্রম অনুযায়ী সাজানো শব্দ

দুরন্ত, জাগরণী, দুর্জয়, জাঁকানো, ঘাপটি, আভরণ, মনোরম, সুকুমার, আবিষ্কার, সন্ধি, আড্ডা, বক্তব্য, ধৌত, বুভুক্ষা, সিঁধেল, চৌচির, শিয়র, কায়া, মুমূর্ষু আকাশ, প্রত্যুক্তি, হর্ষ, খামখেয়ালি, কোন্দল, তৎপর, ছুতার, মৃন্ময়, তৃষিত, হেরফের, লৌকিক, নিরীক্ষক, বাঁশ, বন্ধু, বালতি, খেয়াল, ক্ষমা, খাঁ খাঁ, ঘুমন্ত, ডুবুরি, আড়াই, তত্ত্ব, আঁশ, কার্যকর। 

 

Content added By

অভিধানে শব্দ খুঁজি (৪.৪.২)

984

আহমদ শরীফ (১৯২১-১৯৯৯) বাংলাদেশের একজন গবেষক ও প্রাবন্ধিক। তাঁর লেখা বইয়ের মধ্যে আছে 'বাঙালি ও বাঙলা সাহিত্য', 'বাঙলার সুফি সাহিত্য', 'বিচিত চিন্তা' ইত্যাদি।

নিচে আহমদ শরীফের লেখার একটি অংশবিশেষ দেওয়া হলো। এখানকার কিছু শব্দের নিচে দাগ দেওয়া আছে। শব্দগুলো অভিধান থেকে খুঁজে বের করো এবং খাতায় শব্দগুলোর অর্থ লেখো।

 

জিগীষা

আহমদ শরীফ

আরবিতে যা মাগাজি, ফারসিতে তা-ই জঙ্গ, সংস্কৃতে যুদ্ধ এবং বাংলায় লড়াই। বাঘ-সিংহের প্রতি ভয়াল বলেই যেমন মানুষের একটা আকর্ষণ রয়েছে, গা-পা বাঁচিয়ে নিরাপদ দূরত্বে থেকে হিংস্র শ্বাপদ-সরীসৃপ দেখা যেমন আনন্দজনক, তেমনি নিজের নিরাপত্তা সম্বন্ধে নিশ্চিন্ত হয়ে অন্যদের লড়াই বা যুদ্ধ দেখা, তার বর্ণনা শোনা সুখকর। এ যুগে যুদ্ধের ধরন বদলে গেছে, বিবর্তিত হয়েছে যুদ্ধাস্ত্র, তবু আজও তরবারির প্রতীকী মান, অশ্বের ও হস্তীর পার্বনিক মর্যাদা আর সেনানিবাসে রণবাদের প্রাত্যহিক প্রয়োজন ফুরায়নি। 

স্বস্থ ও সুস্থ মানুষের চেতনার গভীরে জীবনের যা মূল প্রেরণা তা হচ্ছে জিগীষা, সেই ভিনি-ভিডি-ডিসি আত্মপ্রত্যয়ী মানুষ বাস্তবে এ জিগীষা চরিতার্থ করে, আত্মপ্রত্যয়হীন দুর্বল মানুষ বিকৃত উপায়ে তা অনুভব উপভোগ করেই থাকে তুষ্ট। বিভিন্নভাবে অপরকে উপকৃত করে খণী কৃতজ্ঞ রেখেই সাধারণ মানুষ জিগীষা পূরণ করে, অন্যেরা গুণে-মানে-মাহাত্ম্যে শ্রেষ্ঠতর হয়ে কিংবা ধনবলে, জনবলে, বাক্যবলে, জনবলে অতুল্য হয়ে কর্মে-ক্রীড়ায়-কৌশলে নৈপুণ্যে-উৎকর্ষে অননা-অজেয় হয়ে মানুষ বিজয়ানন্দ অনুভব করে। আর রাজতন্ত্রের যুগে দিগ্বিজয়ী রাজারা, সেনারা, মল্লরা, পালোয়ানরা প্রতিপক্ষের সঙ্গে বাহুবলে কিংবা অস্ত্রযোগে লড়ে জয়ী হয়ে বিজয়গৌরব উপভোগ করত। এ যুগেও সৈনিকরা তা-ই করে, সমুদ্রতলার পর্বতচূড়ার ও গ্রহলোকের অভিযাত্রীরাও এ জিগীয় বীর। মৃত্যুকে যে ভয় পায় না সে-ই বীর।

আজও ব্যক্তিক, পারিবারিক, সাম্প্রদায়িক, জাতিক, রাষ্ট্রিক জীবনে লড়াই-ই-যুদ্ধই জীবনের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে। এ লড়াইয়ের নাম প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ধনের মানের যুশ্রের কথার লড়াই, ক্ষমতার ভোগের চিন্তার মতের লড়াই চলছে সর্বদা সর্বদা জেতাই লক্ষ্য।

তাই লড়াই করতে-করাতে নয় শুধু লড়াই দেখতেও সুখ। যেখানে প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, যেখানে যুদ্ধ সেখানেই মানুষের উৎসুক দৃষ্টি নিবন্ধ। তাই যুদ্ধকাব্য লোকপ্রিয়, পৃথিবীর প্রাচীন মহাকাব্যগুলো নয় কেবল, রূপকথাগুলোও রাজকুমারদের প্রাণপণ সংগ্রামের, বিপন্ন নায়কের সংকট উত্তরণের এবং বিরুদ্ধ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইতিকথা

 

অভিধানের ভুক্তি

অভিধানের যে অংশে কোনো শব্দের অর্থ ও অন্যান্য পরিচিতি থাকে, তাকে ঐ শব্দের ভুক্তি বলে। নিচে চারটি ভুক্তি দেওয়া হলো। ভুক্তিগুলো থেকে শব্দের অর্থ ও পরিচিতি পাওয়া যাবে। যেমন:

অচেতন/অচেতোন/ [অ+চেতন] ১. বিণ. চেতনাহীন। ২. বিন, জড়বস্তু।

গরম/গরোম/ [ফা.) ১. বিণ. তপ্ত। ২. বি. গ্রীষ্মকাল।

মেঘাবৃত/মেঘাবুবুতো। [মেঘ+আবৃত] বিণ মেঘে ঢাকা।

সাহেব/শাহের/ [আ. সাহিব] বি. সম্মানিত ব্যক্তি।

শীর্ষণপ: ভুক্তির প্রথমে মোটা হরফে শব্দের বানান দেওয়া থাকে। মোটা হরফের এই শব্দটিকে শীর্ষশব্দ বলে। উপরের উদাহরণে অচেতন, গরম, মেঘাবৃত ও সাহেব শীর্ষশব্দ।

উচ্চারণ: শীর্ষশব্দের পরে বাঁকা দুই দাগের মধ্যে শব্দের উচ্চারণ দেখানো হয়। এখানে অচেতোন,/ গরোম্/, /মেঘাবৃবৃতো/ এবং /শাহেব। শব্দগুলোর উচ্চারণ।

শব্দের গঠন: উচ্চারণের পরে তৃতীয় বন্ধনীর মধ্যে শব্দের গঠন দেওয়া থাকে। এখানে প্রথম ও তৃতীয় চুক্তিতে [অ+চেতন) এবং (মেঘ+ আবৃত] হলো শব্দের গঠন।

শব্দের উৎস: উচ্চারণের পরে তৃতীয় বন্ধনীর মধ্যে শব্দের উৎস দেওয়া হয়ে থাকে। এখানে দ্বিতীয় ও চতুর্থ ভুক্তিতে দেখানো [ফা.] এবং [অ সাহিব) হলো শব্দের উৎস। এখানে [ফা.] বলতে ফারসি এবং [আ.] বলতে আরবি উৎস থেকে শব্দগুলো এসেছে বোঝানো হচ্ছে।

অর্থান্তর সংখ্যা: কোনো কোনো ভুক্তিতে ক্রমিক সংখ্যা দিয়ে শব্দের ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করা হয়। এই সংখ্যাগুলোকে বলে অর্থান্তর সংখ্যা। উপরের প্রথম দুটি ভুক্তিতে সংখ্যা (১, ২) দিয়ে ওই শব্দের একাধিক অর্থ বোঝানো হয়েছে।

শব্দের শ্রেণি: ভুক্তির শব্দটি কোন শ্রেণির তা প্রথম বন্ধনীতে সংক্ষেপে নির্দেশ করা থাকে। উপরের উদাহরণগুলোতে (বি.) দিয়ে বিশেষ্য এবং (বিন) দিয়ে বিশেষণ বোঝানো হয়েছে।

শব্দের অর্থ: তুক্তির শীর্ষশব্দের এক বা একাধিক অর্থ থাকে। উপরের উদাহরণে প্রথম ভুক্তির দুটি অর্থ- চেতনাহীন ও জড়বস্তু। একইভাবে দ্বিতীয় ভুক্তির দুটি অর্থ-তপ্ত ও শ্রীষ্মকাল; তৃতীয় ভুক্তির একটি অর্থ-মেঘে ঢাকা; এবং চতুর্থ চুক্তির একটি অর্থ-ব্যক্তি।

Content added || updated By

ভুক্তি তৈরি করি (৪.৪.৩)

529

অভিধান দেখে যেসব শব্দের অর্থ লিখেছ, তার মধ্য থেকে দুটি শব্দের ভুক্তি তৈরি করো। ভুক্তিগুলো যথাযথ হলো কি না, তা নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করো। প্রয়োজনে অভিধানের সহায়তা নাও এবং সংশোধন করো।

 

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...